ইউরোপে অবৈধভাবে প্রবেশে শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে অবস্থান করছে বাংলাদেশও।
লিবিয়ায় মানবপাচারকারী চক্রের গুলিতে ২৬ বাংলাদেশি নিহতের ঘটনায় ইউরোপে মানবপাচারের বিষয়টি আবারও আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ভূমধ্যসাগরের পাশাপাশি ইইউ প্রবেশে নতুন পথ হিসেবে পশ্চিমাঞ্চলীয় বলকান রুট ব্যবহার করছে মানবপাচারকারীরা। ইউরোপে অবৈধভাবে প্রবেশে শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে অবস্থান করছে বাংলাদেশও। অবৈধপথে ইউরোপে পাড়ি জমানোয় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা।
গত মাসের শেষ দিকে লিবিয়ায় মানবপাচারকারী চক্রের গুলিতে ২৬ বাংলাদেশি নিহতের পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে ভূমধ্যসাগর হয়ে অভিবাসীদের ইউরোপে মানবপাচারের বিষয়টি আবারও আলোচনার জন্ম দেয়।
ইউরোপীয় সীমান্ত ও উপকূলরক্ষী সংস্থা, ফ্রন্টেক্সের তথ্য মতে, চলতি বছরের প্রথম চার মাসে পশ্চিমাঞ্চলীয় বালকান রাষ্ট্রগুলো হয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোতে অবৈধভাবে সীমান্ত পাড়ির ঘটনা ৬০ শতাংশ বেড়েছে। এর মধ্যে শীর্ষ পাঁচটি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশও। তাদের মতে, এই সময় প্রায় ৬ হাজার অবৈধ অভিবাসী ছয়টি পশ্চিম বলকান দেশের মধ্য দিয়ে ইইউ প্রবেশ করেছে।
গ্রিস প্রবাসী বাংলাদেশি আল আমিন বলেন, জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ইউরোপে শরণার্থী আবেদনের তালিকায় বাংলাদেশ রয়েছে অষ্টম স্থানে।
এ ঘটনার প্রেক্ষিতে অভিবাসীদের প্রবেশ ঠেকাতে ক্রোয়েশিয়া সীমান্তে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করেছে স্লোভেনিয়া।
ইউরোপের দেশগুলোতে প্রবেশে লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর হয়ে সাত থেকে আটটি রুট ব্যবহার করেন অভিবাসন প্রত্যাশীরা। সম্প্রতি কোস্টগার্ডের তৎপরতায় লিবিয়া থেকে সাগরপথে ইতালি বা গ্রিসে প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়ায় বলকান রুট ব্যবহার করছে মানবপাচারকারীরা। ইউরোপের অন্যান্য অংশের তুলনায় বলকান অঞ্চলের ক্রোয়েশিয়া, স্লোভেনিয়া, সার্বিয়াসহ অন্যান্য দেশ অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেকটাই দুর্বল। অপরাধপ্রবণতাও অনেক বেশি। এই সুযোগে বলকান দেশগুলোকে ঘিরে বর্তমানে ইউরোপে মানবপাচার চক্রের এক বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞ শরীফুল হাসান বলেন, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীরা ১৮টি রুট ব্যবহার করে। কিন্তু ইউরোপে ঢুকতে গেলে তাকে ৭ থেকে ৮ টি রুট বেছে নিতে হয়। এই রুটগুলোর মধ্যে বাংলাদেশিরা ব্যবহার করে সেন্ট্রাল মেরিটেরিয়ান রুট।
অভিবাসন ও নিরাপত্তা খাতে পশ্চিমা বলকান অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় কাউন্সিল। আরও দক্ষ অভিবাসন নীতি এবং সীমান্ত পরিচালনা অর্জনের ক্ষেত্রে কাউন্সিল তাদের সহযোগিতা দিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেয়া হয়।